ফ্যাশনে পরিণত হওয়ার আগে ডেনিমের গল্পটা ছিল বেশ হৃদয়বিদারক

ফ্যাশনে পরিণত হওয়ার আগে ডেনিমের গল্পটা ছিল বেশ হৃদয়বিদারক।
পশ্চিম আফ্রিকায় একটি মোটা-টেকসই কাপড় দাসশ্রেণীর মানুষদের মধ্যে বিতরণ করা হত যাতে তারা ক্ষেত-খামার এবং বাড়িতে কাজ করার সময় পরতে পারে।
এই মোটা-টেকসই কাপড়টি ছিল কখনও ডেনিম বা কখনও রুক্ষ সুতি বা লিনেন – যাকে প্রকাশ্যে “নিগ্রো কাপড়” হিসাবে উল্লেখ করা হত।
দাসদেরকে ডেনিম পরতে দেওয়ার উদ্দেশ্য বলা হত কাপড়ের দীর্ঘস্থায়িত্বতা, কিন্তু মূল উদ্দেশ্য ছিল দাসদেরকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করা এবং নিয়ন্ত্রণ করা।

এটি শুধুমাত্র কাপড়ের ব্যাপার ছিল না, এটি ছিল জাত বা বর্ণ পরিচয়ের ব্যাপার।
দাসশ্রেণীর মানুষদের নিজের পোশাক বেছে নেওয়ার অনুমতি ছিল না, তাদের ইউনিফর্ম হিসেবে ডেনিম পরতে দেওয়া হত।

দ্যা আইরনি?
ব্লু ইন্ডিগো জিন্স বুননের প্রক্রিয়া, ডাইং করার প্রসেস সবকিছুই পশ্চিম আফ্রিকার ঐতিহ্যের অংশ হয়ে গেছে। ব্লু ডেনিমের রঙের সৌন্দর্য, টেকনোলোজি – অনেক কিছুই দাসদের নিজের আবিষ্কার।

এর কয়েক দশক পরে, ১৮৭৩ সালে, লেভি স্ট্রস এবং জ্যাকব ডেভিস পেটেন্ট করেছেন যা আমরা এখন ব্লু জিন্স নামে জানি।
সময়ের সাথে সাথে ডেনিম কেবল একটা নির্দিষ্ট স্টাইলেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, এটি প্রতিনিয়ত বিকশিত হয়েছে।
কাউবয়রা ডেনিম পরতে শুরু করল, কারখানার শ্রমিকরা ডেনিমকে আপন করে নিল।
কবি, শিল্পী, কর্মী, সঙ্গীতজ্ঞ – প্রতিটি ইন্ডাস্ট্রিতে বর্ণবাদ এবং দাসপ্রথার বিরুদ্ধে পরিবর্তনকামী মানুষদের দৈনন্দিন পোশাক হয়ে উঠল ডেনিম।

আজ ডেনিম সর্বত্র।
কিন্তু ডেনিমের প্রতিটি সেলাইয়ের মধ্যে লুকিয়ে আছে এক ভুলে যাওয়া ইতিহাস।
আমরা কেবল স্টাইলের জন্য এটি পছন্দ করি সেটা নয়, বরং আমরা তাদের ঐতিহ্য বহন করি যাদেরকে বর্ণবাদ আর দাসত্বের পোশাক হিসেবে ডেনিমকে পরতে দেওয়া হয়েছিল, যারা কখনও ডেনিমকে নিজের জন্য পছন্দ করে বেছে নিতে পারে নি।

Leave a Comment

0
    0
    Your Cart
    Your cart is emptyReturn to Shop
    Scroll to Top